Saturday, 9 August 2014

বিয়ের পর হৃদয়-সুজানার প্রথম সাক্ষাৎকার, জানালেন মিষ্টি প্রেম-বিয়ে-দাম্পত্যের গল্প


বছর অপেক্ষার পর ১০ জুলাই সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের প্রেমের ডাকে সাড়া দেন মডেল সুজানা১ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দুজনবিয়ের পর প্রথম সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন তাঁরা একটি নামকরা দৈনিক পত্রিকায়। "কালের কণ্ঠ" পত্রিকার সৌজন্যে পাঠকের জন্য হুবহু তুলে দিলাম আমরা সাক্ষাৎকারটিমূল লেখাটি লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন
-'এত দিন শুনেছি, বিয়েতে কবুল বলার সময় মেয়েরা কাঁদে! কিন্তু সুজানাকে কবুল বলার সময় আমার নিজের চোখেই পানি চলে এসেছিলখুব ইচ্ছা করছিল মন ভরে কাঁদতে! এই কান্না আসলে সুখের কান্না' বলছিলেন হৃদয় খানবলতে বলতে কেঁদেই ফেললেনখানিক বাদে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে যেন স্মৃতির ডালি খুলে বসলেন- 'সুজানাকে আমি চিনি চার বছর ধরেভালোবাসাটা অনুভব করেছি শেষ তিন বছর


এই সময়টায় অনেক কষ্ট, মন খারাপ, অভিমান আর সংশয়ের মধ্যে কেটেছেএখন অনেক শান্তি লাগছেআরাম লাগছেআমি তাকে জয় করতে পেরেছিমনে হচ্ছে, আমার জীবন সার্থকসব চাওয়া এখন পূর্ণসুজানা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গিফট'
হৃদয় যখন কথাগুলো বলছেন, তখন পাশে দাঁড়িয়ে সুজানাহাতে হৃদয়ের সকালের ব্রেকফাস্ট 'টোস্ট'নিজ হাতেই তৈরি করেছেন স্বামীর জন্যএকটু খাইয়েও দিলেনএরপর জানালেন নিজের অনুভূতির কথা, 'আমি না এখনো কিছু বুঝে উঠতে পারছি নাগত কয়েকটা দিন অনেক বিজি ছিলামবিয়েটা হুট করেই হয়ে গেছেখুব ছোট করেই করার কথা ছিলএরপর দেখি, অল্প অল্প করে অনেক বড় হয়ে গেছেআমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন'
বিয়ের পর কেমন লাগছে? এই কয়েকটা দিন কিভাবে কাটালেন?
-'কালই প্রথম বের হয়েছিআমরা যে বিয়ে করেছি, সেটাও একটু একটু ফিল করছি এখন তো প্রতিদিনই দাওয়াতের ওপর আছিকাল হৃদয়ের বড় খালার বাসায় দাওয়াত ছিলআজ আমার আরেক রিলেটিভের বাসায়' বলছিলেন সুজানাতাঁর মুখ থেকে কথাটা নিয়ে নিজের কথা জোড়া দিতে লাগলেন হৃদয়'আমার কাছে তো সব কিছুই অসাধারণ লাগছেমনে হচ্ছে, পৃথিবীতে আমার চেয়ে খুশি মানুষ, সুখী মানুষ আর কেউ নেই যাকে চেয়েছি, তাকে পেয়েছিনিজের মধ্যে কেমন যেন একটা দায়িত্ব চলে এসেছে সামনের দিনগুলো কিভাবে আরো ভালো করা যায়, মনে মনে সেটাও ভাবছি'
হৃদয়কে 'হ্যাঁ' বলতে সুজানা এত সময় নিয়েছেন! আর বিয়ে করছেন মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানেএটা কিভাবে সম্ভব হলো?
-সুজানা বলেন, 'খুব গভীরভাবে চিন্তা করে দেখলাম, হৃদয় আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসেহৃদয়ের চাচা-চাচি, খালা-খালুরাও আমাকে বিষয়টি বুঝিয়েছেনআমাদের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়স্বজনও ওকে পছন্দ করতে লাগলসবার কথায় সাহস পেয়েছিতা ছাড়া আমি হৃদয়ের মধ্যে খারাপ কিছু দেখিনিসব মিলিয়ে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছেসেই বিশ্বাস থেকেই...' খানিকটা থেমে সুজানা যোগ করেন, 'একজন মানুষ হিসেবে হৃদয় অসাধারণজীবনে অনেকে আসে-যায়, তবে দুঃসময়ে কে পাশে থাকল, সেটা ইম্পর্ট্যান্টআমার বাবার যখন ক্যান্সার, সেই দুটি বছর হৃদয় নিঃস্বার্থভাবে আমার পাশে ছিল'
সুজানা কেমন মেয়ে? বন্ধু, প্রেমিকা, বউ- তিন রূপেই তো দেখলেন?
-কথাটা শুনে আলতো করে হেসে দিলেন হৃদয়এরপর একনাগাড়ে বলে গেলেন, 'আমি আজকের এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি সুজানার ভালোবাসার ওপর ভর করেআমার জীবনটাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে সেআগে মিউজিক করতাম নিজের খেয়ালখুশিমতো সুজানার প্রেমে পড়ার পর থেকে অনেক সিরিয়াসব্যক্তি, সমাজ, মানবতা- এ বিষয়গুলো সুজানাই আমাকে ভালোভাবে শিখিয়েছেআগে সবাই আমার মিউজিকটাই পছন্দ করতএখন একজন মানুষ হিসেবেও পছন্দ করে, ভালোবাসে, দোয়া করেসবই সুজানার অবদানসুজানার কারণে আমার জীবনে অনেক বরকত এসেছেসামনে আরো ভালো হবে আমি জানি'
পাশ থেকে হৃদয়ের একটা অভিযোগ খণ্ডালেন সুজানা'হৃদয় বলে, আমি নাকি তাকে বেশি বকা দিইআচ্ছা, ও যদি কোনো ভুল করে, তাহলে আমিই তো বকা দেব, তাই না? ভালো কিছু করলে তো আমিই বেশি খুশি হই'
আগামী অক্টোবরে সুজানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তুলে নেবেন হৃদয় তার আগে অন্য রকম একটা প্ল্যান আছে সুজানারপ্ল্যানটি হৃদয়ের বেশ মনে ধরেছেসেটা কী?
-শোনা যাক সুজানার কণ্ঠেই- 'আনুষ্ঠানিকভাবে হৃদয়ের ঘরে বউ হয়ে যাওয়ার আগে ছোট্ট একটি অনুষ্ঠান করবসেখানে এতিম ও অসহায় শিশুদের দাওয়াত দেব অনুষ্ঠানে আমি আর হৃদয় বউ-জামাই সাজববাচ্চাদের সঙ্গে একত্রে খাব'
বিয়ের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার পর থেকেই ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছে এই জুটিসবার এমন ভালোবাসায় দারুণ উৎফুল্লও তাঁরাতবে সমালোচকদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, সুজানা হৃদয়ের সাত-আট বছরের বড়
এ প্রসঙ্গে একসঙ্গে কথার গাড়িতে চড়লেন দুজন- 'এটা আমরা একফোঁটাও গায়ে লাগাই নাআমাদের ধর্মে, হাদিসে- কোথাও কিন্তু লেখা নেই যে ছোট-বড় বিয়ে করা পাপযাদের নিন্দা করার অভ্যাস করবেআমরা অনেক হ্যাপি, এটাই ইম্পর্ট্যান্ট'




SHARE THIS

Author:

Facebook Comment

0 comments: