Tuesday, 16 June 2015

নায়লা নাইম: আমাদের লজ্জা ভাঙ্গার নায়িকা


সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত মডেল নায়লা নাইম। খুব অল্প সময়ে স্বল্পবসনে নিজের নান্দনিক উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয়। কিন্তু সমালোচনাও তাকে কম সইতে হয়নি। নগ্নতা ও দেশিয় সংস্কৃতির পরিপন্থি হিসেবে নায়লার অবস্থানকে বিতর্কিত বলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই।
সম্প্রতি এসব সমালোচনার জবাব দিলেন নায়লা। ফেসবুকে সামলোচকদের ভণ্ডামির মাত্রা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে এই রিপোর্ট লেখার ছয়ঘন্টা আগে এক স্ট্যাটাসে তিনি পাল্টা সমালোচনা ছাড়েন। নায়লা নাইম বলেন, নায়লা নাইম ছবি আপলোড দিলে (প্রকাশ করলে) আমাদের দেশ, সংস্কৃতি এবং ধর্মের কথা মনে পরে। বাকি সময় আমরা ‘বেবি ডল’ (সানি লিওন অভিনীত রাগীনি এম এম এস টু সিনেমার গান) দেখি।
উল্লেখ্য, পাঁচ বছর ধরেই মডেলিং জগতের সঙ্গে যুক্ত আছেন ব্যক্তিগত জীবনে দন্তচিকিৎসক নায়লা নাঈম। তবে তিনি আলোচনায় আসেন ২০১৩ সালে গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে।
ফেসবুকে নিজের খোলামেলা অবস্থান প্রসঙ্গে নায়লা নাইম মিডিয়াকে সম্প্রতি বলেন, ‘ছবিগুলো দেখে অনেকে কিন্তু প্রশংসা করছে। তবে সমালোচনাও যে করছে না, তা নয়। আমার কথা হচ্ছে দেশের বাইরের মডেলরা যদি নিজেদের সৌন্দর্যটাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন, আমরা কেন পারব না। তা ছাড়া আমি ছবিগুলোকে মোটেও খারাপভাবে দেখছি না। –সূত্র: প্রথম আলো
এ প্রসঙ্গে কথা হয় দেশের জেষ্ঠ মডেল বুলবুল টুম্পার সঙ্গে। প্রিয়.কমকে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে যার যার অভিরুচির ব্যাপার। নায়লা যদি এমনভাবে কাজ করে হ্যাপি হয়, তবে সে এমনটাই করবে। উন্নত বিশ্বের তুলনায় এটা কোন বিষয়ই না। তবে যেহেতু আমাদের দেশ একটা ইসলামিক কান্ট্রি সে হিসেবে হয়তো একটু অন্যভাবে দেখে কেউ কেউ ।’
তবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মডেলিং এর বর্তমান অবস্থান অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়েছে। কিন্তু এখনো আমাদের দেশে কোন যথাযোগ্য মডেলিং স্কুল কিংবা এজেন্সি না দাঁড়ানোর ফলে মডেংলিংকে পেশা হিসেবে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে মডেল হতে আসা নারীদের। পুঁজিবাদের এই যুগে পণ্যের মডেল একটি অপরিহার্য বিষয় হলেও এইখাতে পুঁজিপতিদের নজর খুব একটা দেখা যায়নি। কিছু কিছু ব্যাক্তি উদ্যোগে মডেলিং স্কুলই মডেল হতে আসা তরুণীদের ভরসাস্থল হয়ে উঠছে।
কিন্তু মডেলদের সামাজিক অবস্থান কি খুব একটা সুখকর? মডেলিং মানেই সমাজ বুঝছে বেশ্যাবৃত্তির আধুনিক সংস্করণ। জাতীয়তাবাদীরা বলছেন জাত গেলো, জাত গেলো...ধর্ম বলছে নাউজুবিল্লাহ!
একদিকে ধর্ম অন্যদিকে দেশিয় সংস্কৃতি কোথায় যাবেন আমাদের মডেলরা? এইসব প্রশ্ন বুকে নিয়ে যেসব সাহসী নারীরা মডেল হিসেবে কাজ করছেন তাদের পক্ষ থেকে নায়লা নাইম কি একটি বড় ধাক্কা দিলেন না সমাজের দেয়ালে? চোখের লজ্জা ভেঙ্গে দিলেন লক্ষ পুরুষের। নিজের রূপের কাছে কাঙ্গাল করে ছাড়লেন।
খুব কম সময়ে একক প্রচেষ্টায় মডেলিং এ নিজের স্বাতন্ত্র তৈরী ও আলোচিত হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সম্ভবত উদাহরণ হয়ে থাকলেন নায়লা নাইম ।
কিন্তু সমাজবদলের পথে সব মানুষই যে একা। নায়লা কি তা জানেন?


SHARE THIS

Author:

Facebook Comment

0 comments: